এনজিও কর্মী থেকে শীর্ষ হুন্ডি সম্রাট টেকনাফের আব্দু রশিদ ভেক্কু গ্রেফতার

বিশেষ প্রতিবেদক :

তালিকাভুক্ত হুন্ডি ব্যবসায়ী, শীর্ষ হুন্ডি সম্রাট টেকনাফের আব্দু রশিদ ভেক্কু (৫৫) কে আটক করেছে পুলিশ। চট্টগ্রামের মনসুরাবাদ এলাকা থেকে গত বৃহস্পতিবার তাকে আটক করে টেকনাফ থানায় সোপর্দ্য করা হয়।

টেকনাফ থানা পুলিশ শুক্রবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরন করেছেন। টেকনাফ থানায় দায়ের হওয়া একটি মানি লন্ডারিং মামলায় (নং ৫৫-১৯/০৩/২০১৯ ইং) তাকে কারাগারে পাঠানো হয় বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা  পরিদর্শক রাকিবুল ইসলাম খান। ধৃত ভেক্কু টেকনাফ পৌরসভার কুলাল পাড়া এলাকার মৃত মো. আলীর ছেলে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, জেলা পুলিশের করা ২২ শীর্ষ হুন্ডি ব্যবসায়ী যারা ইয়াবা ব্যবসার টাকা হুন্ডির মাধ্যমে দেশবিদেশে পাচার করতেন। সেই তালিকায় ভেক্কুর নাম রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার করা ৬৩ হুন্ডি ব্যবসায়ীর তালিকায়ও রয়েছে ভেক্কুর নাম। একসময়ের এনজিও কর্মী ভেক্কু ডলার-স্বর্ণ ও হুন্ডি ব্যবসার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করলেও নিজের ভাগ্য বদলে ফেলেন দ্রুত ।

সাধারন মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে থেকে কোটিপতির খাতায় নাম লেখান। টেকনাফ সীমান্তে মিয়ানমারের চাল আমদানীর ছদ্মবেশে ভেক্কু ডলার-হুন্ডির মাধ্যমে অল্পদিনে কোটি কোটি টাকা আয় করেন। পরে আইন শৃংখলা বাহিনীর নজর এড়াতে কৌশলে গা ঢাকা দেন। প্রচুর অর্থ বিত্তের মালিক হওয়ার পর কুলাল পাড়া এলাকায় জমি কিনে তিনি তৈরী করেছেন আলিশান বাড়ি, এছাড়া টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজির পাড়া, শীলবুনিয়া পাড়া, হ্নীলা, হোয়াইক্যং, পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় তার বহু বসতভিটার উপযোগী জমি ও বাগানবাড়ি রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া চট্টগ্রামেও নামে-বেনামে সম্পদ রয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

তার বড় ভাই আব্দুল কাদের চিহ্নিত হুন্ডি ব্যবসায়ী, হুন্ডি ব্যবসার মাধ্যমে একই পথে কোটিপতির খাতায় নাম লেখান। তার আরেক ভাই মুস্তাক সেও হুন্ডি ও ইয়াবা কারবারে জড়িত রয়েছে বলে জানা গেছে।
নিকটাত্মীয় ও বিশ্বস্থ্য লোকজন দিয়ে হুন্ডি সিন্ডিকেট পরিচালনা করার কারনে ভেক্কু ছিলেন সর্বদা ধরা ছোয়ার বাইরে। অনুসন্ধান চালালে সিন্ডিকেটের সবার নাম বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে কুলাল পাড়া এলাকার তার প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন ভেক্কু গা ঢাকা দেওয়ার পর থেকে এলাকার লোকজনের সাথে তেমন সম্পর্ক রাখতেন না। হ্নীলা এলাকায় তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন ও আত্মীয়দের মাধ্যমে তার বাড়িঘর ও ব্যবসা দেখা শুনা করতেন।

সচেতন মহল দাবী জানিয়েছেন, ভেক্কু যেহেতু একজন শীর্ষ হুন্ডি কারবারী। তাই তাকে রিমান্ডে এনে সীমান্তের হুন্ডি ব্যবসার নাড়ি নক্ষত্র দেশ বিদেশে থাকা হুন্ডি চক্রের নেটওয়ার্ক বের করে তা শেকর যেন উৎপাটন করা হয়। প্রসঙ্গত আন্তর্জাতিক হুন্ডি চক্রের সদস্য টেকনাফের টিটি জাফর, বাট্টা আযুব সহ অনেক শীর্ষ হুন্ডি কারবারী এখনো ধরা ছোয়ার বাইরে রয়েছে ।